সব
ওয়ারীতে পানির ট্যাংকে মশার লার্ভা, ২০ হাজার টাকা জরিমানা
রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় এ রোগের বাহক এইডিস মশার বিস্তার ঠেকাতে ‘চিরুনি অভিযান’ চালাচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ওয়ারীর বলধা গার্ডেন এলাকা থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানে এইডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় একটি বাড়ির মালিককে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এইডিস মশা বংশবিস্তার করে জমে থাকা পরিষ্কার পানিতে। জনগণ ‘সচেতন না হওয়ায়’ বাসাবাড়িতে বিভিন্নভাবে জমে থাকা পানিতে মশা বংশবিস্তার করছে জানিয়ে চিরুনি অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
সকালে অভিযান শুরুর পর ওয়ারীর একটি বাড়িতে প্রবেশ করে সেখানে কোনো লার্ভা না পেয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে শুরু করে ভ্রামমাণ আদালতের ১৩ সদস্যের দল। পরে ওয়ারীর টিপু সুলতান রোডের ২৪ নম্বর হোল্ডিংয়ে একটি নির্মাণাধীন বাড়ির সামনে পানির ট্যাংকে তারা এইডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র খুঁজে পান।
তাৎক্ষণিক বাড়ির কেয়ার টেকার রুহুল আমিনকে ডেকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রামমাণ আদালতের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সফিউল্লাহ। তবে সেই জরিমানা আদায় করতে লেগে যায় প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা।
আরও পড়ুন : সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
এত দীর্ঘ সময় লাগার কারণ জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সফিউল্লাহ বলেন, “জরিমানার টাকা জোগাড় করতে তো সময় লাগে।” আর ওয়ারীর ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সারওয়ার হোসেন আলো বলেন, “বাড়ির মালিক আসতে একটু সময় লেগেছে, তাই দেরি হয়েছে।” পরে ওই বাড়ির কেয়ারটেকার রুহুল আমিন বলেন, “২০ হাজার টাকা জরিমানা হয়েছে, আমরা দিয়ে দিয়েছি।”
এর আগে দিনের অভিযানের শুরুতে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, এ সিটির ২১টি এলাকাকে মশার বিস্তারের বিবেচনায় ‘ঝুকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
“এটা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ। এর সঙ্গে আমরা আরও চারটা ওয়ার্ডকে যুক্ত করে ২৫টি ওয়ার্ডে চিরুনি অভিযান শুরু করেছি। এই অভিযানে জনবল দ্বিগুণ করা হয়েছে, অর্থাৎ একটি ওয়ার্ডে সকালে এবং বিকালে যারা আলাদাভাবে কাজ করতেন, তাদেরকে একত্রিত করে মাঠে নামানো হয়েছে। ডেঙ্গু পরিস্থিতি যাতে আর ভয়াবহ অবস্থার দিকে না যায় সেই চেষ্টাটা আমরা করছি।”
এবার বর্ষা শুরুর আগে থেকেই এইডিস মশাবাহিত এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা এরইমধ্যে ৯ হাজার ছাড়িয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জনের।
এইডিস মশা শনাক্তে চালানো জরিপে ঢাকায় মশার যে উপস্থিতি দেখা গেছে, তাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় সামনে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব আরও বাড়ার আশঙ্কা করেছেন তারা।
ডেঙ্গুতে মানুষ মারা যাচ্ছে, এটা সিটি করপোরেশন ব্যর্থতা হিসেবে দেখছে কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, “জীবনের মূল্য সবার কাছে গুরুত্বপূর্ণ, আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি। সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি।”
২৫টি ওয়ার্ডে এইডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে ৩ দিনের বিশেষ চিরুনি অভিযানে করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফজলে শামসুল কবির এবং অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকারও উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র : এনএনবি
Time news FB Link
মন্তব্য