ঢাকা দুপুর ২:৪২, শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
ঘোড়াঘাটে শ্রমিক-দলের উদ্যোগে রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা সম্বলিত লিফলেট বিতরণ ফুলবাড়ীতে ইরিবোর ধানের বাম্পার ফলন ফুলবাড়ীতে পূর্বের সত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষরা বাড়িতে ঢুকে মারপিট ফুলবাড়ী ২৯ বিজিবি সীমান্তে অভিযান চালিয়ে মাদক সহ আটক ৩ ছয় দফা দাবিতে কুষ্টিয়ায় পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বি‌ক্ষোভ সমাবেশ আওয়ামীলীগ ফ্যাসিবাদ এখনও গণতন্ত্র নৎসাত করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে কুষ্টিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় গৃহবধূ নিহত  ৬ দফা দাবিতে কুষ্টিয়ায় সড়ক অবরোধ পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ কুষ্টিয়ায় অস্ত্র ও গুলিসহ ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার কুষ্টিয়ায় ড্রাম ট্রাকের চাপায় মসজিদের মুয়াজ্জিন নিহত টেন্ডার আহ্বানের বিজ্ঞাপনে স্বাক্ষরের দিনেই প্রকাশ, তড়িঘড়ি করে পুনরায় টেন্ডার আহ্বান আলোচনায় নতুন মোড়, চুরির মাল ফেরত আনতে গিয়ে খুন! কুষ্টিয়ায় রিকশাচালকের মৃত্যু ঘিরে ২ ব্যবসায়ীকে ফাঁসানোর অপচেষ্টা মারধরে রিকশাচালকের মৃত্যু, রাতে নিখোঁজ হওয়া ঘিরে রহস্য আবার চেন্নাইয়ের অধিনায়ক ধোনি, চোটের জন্য নেই রুতুরাজ কুষ্টিয়ায় চাল ব্যবসায়ী রশিদের বাড়িতে গুলির ঘটনায় শাকিল গ্রেপ্তার কুষ্টিয়ায় চালকল মালিক সমিতির সভাপতি রশিদের বাড়িতে গুলি ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত, আহত ৩০ স্বল্প পরিসরে রোগী ভর্তি শুরু কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ায় বিক্ষোভ ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে শাটডাউনে ইবি প্রশাসন কুষ্টিয়ায় দুই শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা, অভিযুক্তকে গণপিটুনি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার একেএম কামরুজ্জানকে গন সংবর্ধনা ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর সাথে প্রাণ কোম্পানির জিএম এর সৌজন্য সাক্ষাত ভারতে বাস দুর্ঘটনা, ৭০ জনের বেশি বাংলাদেশি পর্যটক কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে সাংবাদিক কল্যান ট্রাস্ট্রের চেক বিতরণ কুষ্টিয়ায় শিশু ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিবেশী দাদা গ্রেপ্তার কুষ্টিয়ার মনোহরদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির ঈদ পূর্নমিলনী অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়ায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩ জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে কয়া ইউনিয়ন বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপর হামলা, আহত ৩

বিরোধীদের এক দফার আন্দোলনের ঘোষণা আসছে, সবাই দেখবে ও বুঝবে

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী আপডেটঃ বুধবার, ১২ জুলাই, ২০২৩, ৩:৫৩ অপরাহ্ণ 110 বার পড়া হয়েছে

বিরোধীদের এক দফার আন্দোলনের ঘোষণা আসছে, সবাই দেখবে ও বুঝবে

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী : গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা গেছে, আগামী ১২ জুলাই নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সম্মুখে সমাবেশ ঘটিয়ে বিএনপি সরকার পতনের এক দফার আন্দোলন ঘোষণা করতে যাচ্ছে। ওই দিনই শরিক দল এবং জোটগুলো সম্ভবত ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশ ঘটিয়ে একই ধরনের আন্দোলনের কর্মসূচি দিতে যাচ্ছে। বিএনপি তাদের সমাবেশটিকে বড় আকার দিতে ব্যাপকসংখ্যক কর্মী-সমর্থকের উপস্থিতি নিশ্চিত করবে। যদিও জায়গাটি একটি সড়ক, কোনো মাঠ কিংবা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মতো জায়গা নয়। তথাপিও এখানে সমাবেশের আকার বড় করতে গেলে অলিগলি রাস্তাঘাটে শ্রোতাদের বসা বা দাঁড়ানো ব্যতীত অন্য কোনো উপায় নেই। বিএনপির নেতাকর্মীরা এই সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য নিশ্চয়ই মুখিয়ে আছে। দীর্ঘদিনের প্রস্তুতির ঘোষণার অনুষ্ঠান হিসেবে এটিকে তারা দেখছেন। সুতরাং সমাবেশটি বিশাল কিংবা বড় যাই হোক, ১ বছর ধরে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বলা সরকার পতনের আন্দোলনের ঘোষণা কী হতে যাচ্ছে সেটি শোনা এবং জানার অপেক্ষা দলীয় নেতাকর্মীর বিশেষভাবে রয়েছে; এতে কোনো সন্দেহ নেই।

বাংলাদেশে সরকার পতনের যে কটি আন্দোলন হয়েছে, তার মধ্যে দুটিতে সরকারের পতন ঘটেছে। একটি ১৯৯০-এর আন্দোলনে এরশাদ সরকারের পতন, অন্যটি ১৯৯৬-এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলনে খালেদা জিয়ার সরকারের পদত্যাগ। ২০০৬ সালেও দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের বিরুদ্ধে যে সর্বাত্মক আন্দোলন সূচিত হয়েছিল সেই আন্দোলন দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করলেও ১/১১ এর পালাবদল ঘটিয়ে ক্ষমতায় সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আবির্ভূত হয়, যা দেশে দুই বছর ক্ষমতায় আসীন ছিল। সরকার পতনের আন্দোলন ২০১৩ এবং ২০১৫ সালেও ঘটেছিল।

কিন্তু সে যাত্রায় বিরোধীরা সফল হতে পারেনি। এবার বিএনপি-জামায়াত এবং নামসর্বস্ব বেশ কিছু দল ও নেতা মিলিত যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষিত হতে যাচ্ছে। সময়ের যেমন ভিন্নতা অতীতে ছিল, এখনো আছে। দেশীয় বাস্তবতা অতীতে যেমন ভিন্ন ভিন্ন ছিল, এবারো ভিন্নতা রয়েছে। বিদেশি নানা মহল নানাভাবে বাংলাদেশকে দেখছে, কূটনৈতিক বাকযুদ্ধেও কেউ কেউ অংশ নিচ্ছে, বিরোধীদেরও চেষ্টা রয়েছে কোনো কোনো মহলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির। আবার কোনো কোনো বিদেশি শক্তিও তাদের আচার-আচরণে নানারকম কৌশলের খেলা খেলছে বলে মনে হচ্ছে। সরকারি দল আওয়ামী লীগের নেতারা বিরোধী দলের আন্দোলন নিয়ে ‘চিন্তিত নয়’ বলে দাবি করছে। গ্রামগঞ্জের সাধারণ মানুষ এখনো পর্যন্ত ঢাকার আন্দোলন নিয়ে খুব একটা অবহিত নয়। তবে দুশ্চিন্তা অনেকের মধ্যেই রয়েছে।

বিশেষত ২০১৩-১৪ এবং ’১৫ সালের মতো দেশে জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর, অবরোধের মতো কিছু ঘটতে যাচ্ছে কিনা সেটি তাদের দুশ্চিন্তার বিষয়। বিরোধীরা কতটা জনগণকে কাছে টানতে পারবে সেটি এখনো বলার সময় আসেনি। আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এখনো আগামী নির্বাচন নিয়ে দেশে বিরোধীদের আর বিদেশে বিদেশিদের যা কিছু চলছে তা নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় আছে বা করণীয় বিষয়ে সাংগঠনিক কোনো প্রস্তুতি নিচ্ছে তেমনটিও দেখা যাচ্ছে না। ঠিক বোঝা যাচ্ছে না সরকার পতন আন্দোলনের মতো বিষয় যখন একটা রাষ্ট্রে ঘোষিত হতে যাচ্ছে তখন বিষয়টি কেবল গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাইরে সাধারণ মানুষের মধ্যে তেমন কোনো আগ্রহ বা পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক, বিভাজন ইত্যাদি দৃশ্য গ্রাম-গঞ্জে এমনকি শহরেও খুব একটা দেখা যাচ্ছে না।

আজকাল মানুষ ২৫-৩০ বছর আগের মতো দেশের রাজনীতি নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাতে চায় না। যদিও নির্বাচন এলে যে যার পছন্দের প্রার্থী বা মার্কায় ভোট দিতে চায়। কিন্তু কয়েকবারই তো বাংলাদেশে ভোট সুষ্ঠু হওয়ার নজির স্থাপিত হয়নি। যারা এখন আন্দোলন করছেন, তাদের আমলেও ভোটারবিহীন নির্বাচন হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারও রিমোট কন্ট্রোলে পরিচালিত হতে গিয়ে এক বিতিকিচ্ছিরি ঘটনা ঘটার ফলে ১/১১ সৃষ্টি হয়েছিল। এসব তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়েই এখন যখন আবার সরকার পতনের আন্দোলন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবি, সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা ইত্যাদির মতো দাবি নিয়ে বিরোধী দল কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছে, তখন বেশির ভাগ মানুষেরই চেয়ে দেখার বেশি কিছু বলার নেই। কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অভিজ্ঞতা সুখের হয়নি। এখন সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবির বিষয়টি অনেকটা প্রতিশোধ নেয়ার, উচিত শিক্ষা দেয়ার মনোবৃত্তি কিনা সেটিই অনেকের কাছে মনে হতে পারে। ২০১৩-১৪ সালে নির্বাচনে অংশ না নেয়াটিও ছিল নির্বাচনকে ভ-ুল করা এবং দেশে একটি সাংবিধানিক সংকট তৈরি করা অথবা আরেকটি ১/১১-এর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পরিকল্পনা থেকে। এসব অভিজ্ঞতা কারো জন্য খুব নিকটের, আবার অনেকেই হয়তো বিষয়গুলো খুব বেশি জানেন না।

ফলে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশে আওয়ামী লীগ ১৪ দল বনাম বিএনপি-জামায়াত ৩৬ দলের মধ্যে যে বিরোধ চলছে তার বেশির ভাগ মানুষের কাছেই খুব বেশি প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে হয় না। আবারো তত্ত্বাবধায়ক সরকার এলেই যে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়ে যাবে, দেশে গণতন্ত্রের দুধের নহর বয়ে যাবে এমনটি খুব বেশি বিশ্বাস করার মতো আস্থা পাওয়ার নয়। কারণ অতীত অভিজ্ঞতা মুছে ফেলার মতো নয়। আবার নতুন করে দেশকে কিছু দেয়ার মতো রাজনৈতিক শক্তি এ দেশে কতটা রয়েছে সেটি নিয়েও বিভিন্ন মহলে সন্দেহ এবং প্রশ্ন রয়েছে। এসব কারণেই দেশে চলমান যে রাজনৈতিক সংকট সেটি নিয়ে সচেতন মহলের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থাকলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেই নেই কোনো সচেতনতা, দেশপ্রেমের লক্ষণ, বরং ক্ষমতাকেন্দ্রিক আখের গোছানোর প্রবণতা যেভাবে রাজনীতিতে বেড়ে উঠেছে সেটি সাধারণ মানুষকে রাজনীতিবিমুখ করে তুলেছে। এর সুযোগ নিচ্ছে দেশে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী, কালো টাকা ও দুর্বৃত্তায়িত গোষ্ঠী।

আপাতত বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের কর্মসূচি সম্পর্কে যা জানা গেছে, তাতে যুগপৎ কর্মসূচিতে আন্দোলনের সঙ্গে জনগণকে সম্পৃক্ত করার ওপর জোর দেয়া হবে। কর্মসূচির মধ্যে সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন, পদযাত্রা, লংমার্চ ও রোর্ডমার্চ এবং সব শেষে ঢাকামুখী ‘চল চল ঢাকা চল’ কর্মসূচি থাকবে। নির্বাচন কমিশন, সচিবালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং গণভবন ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচির চিন্তাও দলের মধ্যে রয়েছে। এসব কর্মসূচি এ মাসেই শুরু করতে যাচ্ছে। বিশেষত বিদেশি কিছু প্রভাবশালী প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসছে। এসব প্রতিনিধিদের মধ্যে কারো কারো সঙ্গে বিএনপির সাক্ষাৎ হওয়ারও কথা আছে। ফলে ওই সব বিদেশি প্রতিনিধি বাংলাদেশে থাকা অবস্থাতেই বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের অংশী দলগুলো সরকারের বিরুদ্ধে তাদের জোরালো অবস্থান দেখাতে চায়। তবে জুলাই মাসে সব কর্মসূচির কিছু কিছু পালন করা গেলেও সেপ্টেম্বর মাসটিকেই তারা তাদের চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য নির্ধারণ করতে যাচ্ছে এটি বোঝা যাচ্ছে। আগস্ট মাস বিএনপির জন্য খুব সুখের নয়, আওয়ামী লীগের জন্য ভয়াবহ ট্র্যাজেডির, জাতির জন্যও মহাবিপর্যয়ের। সুতরাং সে সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার অনুকূল পরিবেশ বিএনপির থাকবে না এটি প্রায় নিশ্চিত।

আরও পড়ুন : ডেঙ্গুর প্রকোপ : শিশুদের বাড়তি যত্ন প্রয়োজন

অক্টোবর মাসে যেহেতু নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হবে, তাই বিরোধীরা চাইবে সেপ্টেম্বর মাসে যা করার তার শেষ পরিণতি তাদের মতো করে দেখার। তারা গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করার ধারণা দিচ্ছে। গণঅভ্যুত্থান অনেক বড় রাজনৈতিক দর্শনের ব্যাপার। সেটি ঘটাতে জাতীয় জাগরণ সৃষ্টি করতে হয়। সে রকম জাগরণের কোনো ইস্যু আন্দোলনরত দলগুলোর হাতে নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রতি আস্থা যদি বেশিরভাগ মানুষের মধ্যেও থাকত, তাহলে অন্তত শহরগুলোতে হলেও একটা বড় ধরনের আন্দোলন ঘটানো যেত। যেমনটি ঘটেছিল ১৯৯৬-এর ফেব্রুয়ারি মাসে। তখন তত্ত্বাবধায়কের ধারণাটি মানুষের মধ্যে ছিল অনেক হাইপোথেটিকাল, বাস্তব কোনো অভিজ্ঞতা, কার্যকারিতা জানা ছিল না। কিন্তু প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাঝপথেই দেশে একটি অঘটন ঘটে গিয়েছিল, যেটি সামাল দেয়া না গেলে দেশে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতই।

দ্বিতীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার কতটা রাষ্ট্র সম্পর্কে অনভিজ্ঞ ছিল তার প্রমাণ প্রধান উপদেষ্টার শপথ গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গেই পাওয়া গেল। এরপর অন্য উপদেষ্টারা শপথ নেয়ার আগেই পরিস্থিতি সদ্যবিদায়ী সরকারের বিরুদ্ধে যখন নেয়া হলো তখন সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের সংজ্ঞা নিয়ে প্রশ্ন জাগে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গোটা সময়কালেই দেশে ভোটারদের একাংশের ওপর যেভাবে চড়াও হয়েছিল তা ছিল নজিরবিহীন। একটা সরকার তার দায়িত্ব বুঝে নিতেই তো বিরাট সময়ের দরকার। সেই বাস্তবতা তত্ত্বাবধায়কের থাকে না। সমাজের যত বড় অভিজ্ঞ আমলা বা নাগরিক প্রতিনিধিই হোক না কেন সেটি শেষ পর্যন্ত একটি জগাখিচুড়ির সরকার হয়। ২০০৬ সালে তৃতীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার যা করতে পেরেছে তা বিএনপি-জামায়াত জোট হয়তো ঢেকে রাখতে চায়।

কিন্তু রাজনীতি সচেতন মানুষ সেই দুর্ভাগ্যজনক অবস্থার ভেতর দিয়ে রাষ্ট্রকে নিতে চাইবে না। চারজন উপদেষ্টা মাঝপথে বাধ্য হয়েছিলেন পদত্যাগ করতে। এরপর ১/১১-এর সরকার দুবছর কাটিয়ে দিল। এর কোনো ব্যাখ্যা আছে কি? এরপর আবার নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি বিবেকবান মানুষের কাছে অসাড় গল্প শোনার বেশি কিছু নয়। রাজনীতিবিদরাই নির্বাচনকালীন সরকার যেন কোনো প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিকভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারে সেই অভিজ্ঞতা সারাবিশ্বের রয়েছে। আমরা একবার চন্দ্রাভিযান করে যা দেখেছি। এরপর ওই পথে পা মাড়ানোর কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। এই বুঝ রাজনীতিবিদদের নেই তেমনটি বলব না। কিন্তু তারা একে অপরকে শুধু পছন্দই করেন না, অস্তিত্বকেও মেনে নিতে চান না। এর বহুবিধ কারণ আছে।

সেটি ভিন্ন ব্যাখ্যা। কিন্তু নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য দেশ আবার কিছুদিনের জন্য অশান্ত হয়ে ওঠে কিনা সেটি দুর্ভাবনার বিষয়। কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনরায় আসলেও যেই লাউ, সেই কদুই হবে। এটি প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায়। সেকারণে সচেতন মানুষদের সমর্থন এই ব্যবস্থার প্রতি নেই। তবে আগামী নির্বাচনটি যেন যথার্থ অর্থেই সুষ্ঠু, অবাধ, অংশগ্রহণমূলকভাবে অনুষ্ঠিত হয় এটি সবারই কাম্য। সেই প্রতিশ্রুতি এবং এর বাস্তবায়নের জন্য সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং সচেতন মানুষদের কীভাবে যুক্ত করা যায়, কীভাবে নির্বাচনটি কালো টাকা, সাম্প্রদায়িকতা এবং ধর্মের অপপ্রচার ও অপব্যবহারমুক্ত রাখা যায় সেই গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোই প্রাসঙ্গিক হওয়ার কথা। এই আন্দোলনে যেসব রাজনৈতিক দল যুক্ত হচ্ছে, তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ কারো অজানা নয়। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি কি, কি ধরনের রাষ্ট্র তারা করতে চায় সেটিও আমাদের একেবারে অজানা নয়। সুতরাং ওইসব রাজনৈতিক অপশক্তিকেও যখন এই যুগপৎ আন্দোলনে কাছে কিংবা দূরে থেকে হুইসেল বাজাতে দেখতে হবে, তখন সেই আন্দোলন কখনই গণআন্দোলনের চরিত্র লাভ করতে পারবে না। কারণ গণআন্দোলন কিংবা গণঅভ্যুত্থান ঘটাতে কৃষক, শ্রমিক, খেটে খাওয়া মানুষ এবং সমাজের দেশপ্রেমিক সচেতন মানুষের অংশগ্রহণ অপরিহার্য।

সেই রাজনৈতিক বাস্তবতা ব্যতীত যে রাজনৈতিক কর্মসূচি জামায়াত এবং ধর্মান্ধ নানা গোষ্ঠীকে নেপথ্যে রেখে দিতে হচ্ছে তা শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে আরেক রাজনৈতিক বিপর্যয়ের দিকেই কেবল ঠেলে দিতে পারে।
আওয়ামী লীগ, ১৪ দল এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সামাজিক, শিক্ষা-সংস্কৃতির মানুষজন এই পরিস্থিতিতে জনগণের কাছে কতটা দেশের রাজনীতি, শহুরে সরকার পতনের আন্দোলন এর আদ্যোপান্ত বিষয় নিয়ে অবহিত করবে, মানুষকে সচেতন করবে সেটি এই মুহূর্তের ঐতিহাসিক কর্তব্য হতে পারে। কারণ প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী এবার দেশি-বিদেশি নানা মহলকে নানা তুষ্টিতে পুষ্ট করেই আটঘাট বেঁধে নামতে যাচ্ছে। কোনো কিছুকেই হালকাভাবে তাই দেখার নয়। মানুষকে পাশে নিয়েই কেবল এমন রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ উত্তীর্ণ হওয়ার কথা ভাবা যায়। শুধু সেøাগান আর কিছু সভা সমাবেশ করেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কতটা রাখা যাবে বলা মুশকিল। তবে দেশপ্রেম, যুক্তি আর মানুষের আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক অধিকার বাস্তবায়নের সড়ক উন্মোচনের মাধ্যমেই এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় বের করা যেতে পারে।

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী : অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত), ইতিহাসবিদ ও কলাম লেখক।

patwarimamtazuddin@gmail.com


সূত্র : এনএনবি
Time news FB Link

মন্তব্য

আপলোডকারীর তথ্য

Desk

আপলোডকারীর সব সংবাদ
শিরোনাম:
ঘোড়াঘাটে শ্রমিক-দলের উদ্যোগে রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা সম্বলিত লিফলেট বিতরণ ফুলবাড়ীতে ইরিবোর ধানের বাম্পার ফলন ফুলবাড়ীতে পূর্বের সত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষরা বাড়িতে ঢুকে মারপিট ফুলবাড়ী ২৯ বিজিবি সীমান্তে অভিযান চালিয়ে মাদক সহ আটক ৩ ছয় দফা দাবিতে কুষ্টিয়ায় পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বি‌ক্ষোভ সমাবেশ আওয়ামীলীগ ফ্যাসিবাদ এখনও গণতন্ত্র নৎসাত করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে কুষ্টিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় গৃহবধূ নিহত  ৬ দফা দাবিতে কুষ্টিয়ায় সড়ক অবরোধ পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ কুষ্টিয়ায় অস্ত্র ও গুলিসহ ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার কুষ্টিয়ায় ড্রাম ট্রাকের চাপায় মসজিদের মুয়াজ্জিন নিহত টেন্ডার আহ্বানের বিজ্ঞাপনে স্বাক্ষরের দিনেই প্রকাশ, তড়িঘড়ি করে পুনরায় টেন্ডার আহ্বান আলোচনায় নতুন মোড়, চুরির মাল ফেরত আনতে গিয়ে খুন! কুষ্টিয়ায় রিকশাচালকের মৃত্যু ঘিরে ২ ব্যবসায়ীকে ফাঁসানোর অপচেষ্টা মারধরে রিকশাচালকের মৃত্যু, রাতে নিখোঁজ হওয়া ঘিরে রহস্য আবার চেন্নাইয়ের অধিনায়ক ধোনি, চোটের জন্য নেই রুতুরাজ কুষ্টিয়ায় চাল ব্যবসায়ী রশিদের বাড়িতে গুলির ঘটনায় শাকিল গ্রেপ্তার কুষ্টিয়ায় চালকল মালিক সমিতির সভাপতি রশিদের বাড়িতে গুলি ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত, আহত ৩০ স্বল্প পরিসরে রোগী ভর্তি শুরু কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ায় বিক্ষোভ ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে শাটডাউনে ইবি প্রশাসন কুষ্টিয়ায় দুই শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা, অভিযুক্তকে গণপিটুনি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার একেএম কামরুজ্জানকে গন সংবর্ধনা ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর সাথে প্রাণ কোম্পানির জিএম এর সৌজন্য সাক্ষাত ভারতে বাস দুর্ঘটনা, ৭০ জনের বেশি বাংলাদেশি পর্যটক কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে সাংবাদিক কল্যান ট্রাস্ট্রের চেক বিতরণ কুষ্টিয়ায় শিশু ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিবেশী দাদা গ্রেপ্তার কুষ্টিয়ার মনোহরদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির ঈদ পূর্নমিলনী অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়ায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩ জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে কয়া ইউনিয়ন বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপর হামলা, আহত ৩