সব
হোগলাপাতার হস্তশিল্পে ভাগ্য বদল অসংখ্য নারী-পুরুষের
হোগলাপাতা দিয়ে হস্তশিল্পের কাজ করে নিজেদের ভাগ্য বদলে নিয়েছেন নরসিংদী মনোহরদী ও বেলাব উপজেলার নারী ও পুরুষরা। গ্রামগুলোর হতদরিদ্রদের তৈরি হোগলাপাতার দড়ির পণ্য ইউরোপ-আমেরিকাসহ ২৮টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
মনোহরদী উপজেলার জিন্নাবাইধ গ্রামে এক সময় দারিদ্র্য ছিল মানুষের নিত্যদিনের জীবন সঙ্গী। কিন্তু বর্তমানে হোগলাপাতার হস্তশিল্প তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ওই গ্রামের বাসিন্দারা। হোগলাপাতা, বাঁশ ও পাটসহ বিভিন্ন কাচাঁমাল দিয়ে তৈরি ফুলের টব, বাস্কেট, টিস্যু বক্স, পেট বাস্কেট, ক্যারেট, শপিং বাস্কেট ও ফ্লোর মেটসহ নান্দনিক সব জিনিসপত্র তৈরি করছেন তারা। ফলে গ্রামে গড়ে উঠেছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ধরনের হোগলাপাতার হস্তশিল্প তৈরির কারখানা। গ্রামবাসী তাদের তৈরি পণ্য বাজারে বিক্রির মাধ্যমে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
আরও পড়ুন : হাসপাতালে বসেই নতুন সিনেমায় পরীমণি
জিন্নাবাইধ গ্রামের হস্তশিল্প শ্রমিক রাবেয়া বেগম ও মেহেদী হাসান বলেন, আগে আর্থিক সঙ্কটের কারণে পরিবার নিয়ে চলতে হিমশিম খেতে হয়েছে। এক বেলা খেলে অন্য বেলা খেতে পারতাম না। কিন্তু যখন থেকেই হস্তশিল্পের কাজ আমরা শুরু করেছি তখন থেকেই আমরা প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারছি। এতে করে সুন্দর করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছি আমরা। হোগলাপাতা ও পাট দিয়ে তৈরি দড়ি পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে বিভিন্ন কায়দায় বিভিন্ন রকম বাস্কেট, ফ্লোর মেটসহ নানা পণ্য তৈরি করছি। যেরকম অর্ডার দেওয়া হয়, সেই অর্ডার অনুযায়ী আমরা কাজ করে থাকি। বেশিরভাগ সময় অর্ডার আসে দেশের বাইরে থেকে।
হস্তশিল্প কারখানার মালিকরা বলছেন, হোগলাপাতা খুব সহজেই পচনশীল হওয়ায় এতে পরিবেশ দূষণের কোন সম্ভাবনা নেই। পরিবেশবান্ধব পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারিত হওয়ায় হোগলা পণ্যের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। হোগলাপাতার হস্তশিল্প বাংলাদেশের জন্য একটি সম্ভাবনাময় দিক। কিন্তু যতটুকু মূলধন আছে তা দিয়ে কারখানা পরিচালনা করতে কষ্ট হয়। মূলধনের অভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বেশি পরিমাণ মালের অর্ডার পেলে পরে তা ডেলিভারি দেওয়া সম্ভব হয় না। সরকারি সহযোগিতা পেলে এই শিল্প অনেক দূর এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।
নরসিংদীর বেলাবো উপজেলা নির্বাহী কমর্কতা (ইউএও) আয়শা জান্নাত তাহেরা বলেন, হস্তশিল্পে সঙ্গে জড়িত সবাইকে সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হবে। ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত মানুষদের সহায়তা করা হবে। ইতোমধ্যে আমরা তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছি। যারা আমাদের কাছে আসছে তাদেরকে আমরা চেষ্টা করছি সাহায্য করার জন্য।
Time news FB Link
মন্তব্য