সব
৮ হাজার বছর আগের বনমোরগ আজকের সভ্য ব্রয়লার
পৃথিবীর ৮০০ কোটি মানুষের অনেকেই এখনো গরু অথবা শূকরের মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু বিশ্বের এমন সংস্কৃতি খুব কমই খুঁজে পাওয়া যাবে যেখানে খাবারের মেন্যুতে মুরগি খুঁজে পাওয়া যাবে না।
পাঞ্জাবের চিকেন টিক্কা থেকে শুরু করে জাপানের ইয়াকিটোরি, সেনেগালে পুলেট ইয়াসা অথবা ম্যাকডোনাল্ডের নাগেটস-এমন অসংখ্য খাবার তৈরিতে বিশ্বে প্রতিদিন অন্তত ২৫ মিলিয়ন মুরগি ব্যবহার করা হয়।
পৃথিবীর যে জায়গায় মানুষের বসবাস আছে সেখানে ব্রয়লারের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে। প্রাণিজ প্রোটিনের প্রধান উৎস ব্রয়লার মুরগি। খামারে ‘অভিজাত’ বেশে থাকা আজকের এ শান্তশিষ্ট সভ্য ব্রয়লার মুরগি হঠাৎ করেই এত ‘ভদ্রজাত’ হয়ে ওঠেনি।
আরও পড়ুন : ছেলের লিভ-ইন সম্পর্কে আপত্তি নেই শ্রাবন্তীর
এর পেছনেও রয়েছে হাজার বছরের লম্বা ইতিহাস। আধুনিক এ ‘সুশীল’ ব্রয়লারের আদিপিতা বনমোরগ। জন্ম দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জঙ্গলে। নাম ছিল রেড জঙ্গলফাউল (গ্যালাস গ্যালাস গোত্রের)।
প্রায় ৮ হাজার বছর আগে মানুষের সমাজে স্থান পায় ব্রয়লারের পূর্বপুরুষ। সে সময়ই প্রথম গৃহপালিত মুরগি হিসাবে আত্মপ্রকাশ ঘটে রেড জঙ্গলফাউলের। যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা জার্নাল রয়্যাল সোসাইটি ওপেন সায়েন্স জার্নালের এক গবেষণাপত্রে ব্রয়লার মুরগির এ ইতিহাস উঠে এসেছে। এএফপি।
মাংস আর ডিমের সুখ্যাত স্বল্প আয়ুর এ প্রজাতির প্রকৌশলী প্রজনন শুরু হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর।
লিসেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যালিওবায়োলজির ইমেরিটাস অধ্যাপক এএফপিকে বলেন, ‘বিবর্তন ঘটতে সাধারণত লাখ লাখ বছর সময় প্রয়োজন হয়। কিন্তু একটি প্রাণীর নতুন রূপ তৈরিতে সময় লেগেছে কয়েক দশক।’
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মতে, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩৩ বিলিয়ন উড়ন্ত পাখি রয়েছে। তার মধ্যে গৃহপালিত মুরগির সংখ্যা সব বন্যপাখির প্রজাতির চেয়ে তিনগুণ বেশি।
আমাদের পরবর্তী বংশধরদের পৃথিবীর ইতিহাস বিশ্লেষণেও সাহায্য করবে মুরগির হাড়। ২০১৭ সালের রয়্যাল সোসাইটি ওপেন সায়েন্সের এই গবেষণার প্রধান ও ভূতাত্বিক ক্যারিস বেনেট বলেন, ‘আধুনিক মাংসের মুরগি তার পূর্বপুরুষের তুলনায় এখন ভিন্ন। দেহের আকার, কঙ্কালের আকৃতি, হাড়ের রসায়ন ও জেনেটিক্স সবই আলাদা। তাদের অস্তিত্ব তুলে ধরবে প্রকৃতিতে মানুষের হস্তক্ষেপের প্রমাণ।’
ব্রিটেনের লিসেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও বর্তমান পিপল ফর দ্য ইথিক্যাল ট্রিটমেন্ট অব অ্যানিম্যালসের (পিইটিএ) কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের জীবম-ল কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে তার একটি প্রতীক মুরগি। বিশ্বব্যাপী বিপুলসংখ্যক বিভিন্ন মুরগির ফেলে দেওয়া হাড় ভবিষ্যৎ ভূতাত্বিক রেকর্ডে একটি সুস্পষ্ট সংকেত রেখে যাবে।’
সূত্র : এনএনবি
Time news FB Link
মন্তব্য