সব
পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহ দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে
দেশের ভেতরে ও উজানে ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে এ বছর বন্যা হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সরকারি সংস্থা বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি) সূত্রে জানা গেছে, দু-একদিনের মধ্যে নীলফামারীসহ উত্তরাঞ্চলে বন্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে দুধকুমার নদীর পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ২৪ ঘণ্টায় বেড়ে সেখানে বন্যা তৈরি হতে পারে।
এছাড়া পূর্বাঞ্চলে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলাও বন্যাকবলিত হওয়ার আশঙ্কা আছে। নদনদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। চিলমারীতে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে খাউরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ইতোমধ্যে উজানের পানির চাপের ফলে তিস্তা ব্যারাজের সব গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।
আরও পুড়ন: তরুণদের যে ৪ পরামর্শ দিলেন বিল গেটস
গত বছর আমাদের দীর্ঘস্থায়ী বন্যার অভিজ্ঞতা হয়েছে। প্রায় দেড় মাস স্থায়ী সে বন্যায় মানুষকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কাজেই বন্যা মোকাবিলার জন্য এখন থেকেই পূর্বপ্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। যে কোনো দুর্যোগ সামনে রেখে এর মানবিক বিপর্যয়ের দিকগুলোর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
সম্ভাব্য বন্যাকবলিত এলাকায় অসহায় মানুষ যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য ও পানীয় পায়, এ ব্যাপারে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলার বিষয়েও প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। বন্যা-পরবর্তী সংস্কার ও পুনর্বাসনের ব্যাপারেও একই কথা প্রযোজ্য।
এটা ঠিক, দেশে প্রতিবছরই কমবেশি বন্যা দেখা দেয়। বাংলাদেশ ভাটির দেশ। উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নদীর উৎস দেশের ভূ-সীমানার বাইরে। অভিন্ন নদীগুলোর গতিপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখার ব্যাপারে প্রতিবেশী দেশ, বিশেষ করে ভারত ও নেপালের সঙ্গে এমন গঠনমূলক উদ্যোগ নেওয়া উচিত, যাতে তা ফলপ্রসূ হয়। লক্ষণীয়, বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ভবিষ্যতে দেশে বন্যার প্রকোপ ও ব্যাপ্তি ক্রমেই বাড়তে থাকবে।
এজন্য আগাম প্রস্তুতি হিসাবে নদী খননের মাধ্যমে উজান থেকে বেয়ে আসা পলি নিয়মিতভাবে ও দ্রুত অপসারণের বিষয়েও সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মনোযোগ দিতে হবে।
গত ৫০ বছরে দেশে প্রচুর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ তৈরি হলেও রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে সরকার সাফল্যের পরিচয় দিতে পারছে না, এটা এক বড় সমস্যা। সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাব এবং অনিয়ম-দুর্নীতি রোধ করতে না পারাই এর মূল কারণ। নদী দখল ও দূষণমুক্তকরণ, শাসন এবং বাঁধ নির্মাণসহ সব ব্যবস্থাপনা যদি আমরা সঠিক ও দুর্নীতিমুক্তভাবে করতে পারি, তাহলে বন্যার প্রকোপ হ্রাস পাবে বলে আশা করা যায়।
বন্যার সঙ্গে সহাবস্থান করে জীবনধারণের কৌশলও বের করা দরকার। কেননা প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। একই সঙ্গে দেশের নদীগুলোর নাব্য হ্রাস পেয়েছে এবং এর ফলে প্লাবনভূমির ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। এতে কম পানিতেই বেশি বন্যা সৃষ্টি হচ্ছে।
এ অবস্থায় নদী খননের মাধ্যমে উজান থেকে বেয়ে আসা পলি নিয়মিতভাবে ও দ্রুত অপসারণ করা না হলে ভবিষ্যতে দেশে বন্যার প্রকোপ ও ব্যাপ্তি ক্রমেই বাড়তে থাকবে। এ বিষয়েও দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি আমরা।
সূত্র : এনএনবি
Time news FB Link
মন্তব্য