সব
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রিপাবলিকান দলের কট্টরপন্থী আইনপ্রণেতাদের রাজি করিয়ে স্বল্প মেয়াদী একটি অর্থ বরাদ্দের বিল পাস করিয়েছেন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারে অচলাবস্থা (government shutdown) এড়ানো সম্ভব হয়েছে। এই কাজটি করতে গিয়ে ট্রাম্পের বেশ বেগ পেতে হয়েছে, কারণ অনেক রিপাবলিকান সদস্যই এই বিলের বিরোধিতা করছিলেন।
এই বিল পাসের জন্য ট্রাম্প সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন এবং দলটির ‘ফ্রিডম ককাস’-এর সদস্যদের সমর্থন আদায় করেন। উল্লেখ্য, ফ্রিডম ককাস রিপাবলিকান দলের একটি প্রভাবশালী অংশ, যারা রক্ষণশীল নীতিতে বিশ্বাসী। তাদের সমর্থন আদায় করতে পারাটা রিপাবলিকান পার্টির নেতাদের জন্যেও কঠিন ছিল। এই বিল পাসের মাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্প বুঝিয়ে দিলেন, তিনি এখনও দলের মধ্যে কতটা প্রভাবশালী।
জানা গেছে, বিলটির পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে ডজনখানেক আইনপ্রণেতার সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি তাদের কাছে সরকারের কার্যক্রম সচল রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেন। কেউ কেউ তাদের নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি চাইলে ট্রাম্প তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। এমনকি হোয়াইট হাউসে ফ্রিডম ককাসের সদস্যদের সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেন তিনি। বিরোধী সদস্যদের বোঝাতে তিনি তাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক উন্নয়নের ওপর জোর দেন।
এই বিল পাসের ক্ষেত্রে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি সরাসরি ক্যাপিটলে গিয়ে রিপাবলিকান সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। তিনি সরকারের অচলাবস্থা তৈরি হলে দলের যে ক্ষতি হবে, সে বিষয়ে সতর্ক করেন।
তবে, বিল পাসের পর ট্রাম্পের কিছু প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উদাহরণস্বরূপ, এক সদস্যকে তিনি প্রতিরক্ষা ব্যয় আরও ভালোভাবে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলেও, অন্য একজন সদস্যের সঙ্গে আলাপকালে পেন্টাগনের বাজেট বাড়ানোর কথা বলেন।
এই সাফল্যের পর রিপাবলিকানরা এখন তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। তাদের মতে, ট্রাম্পের এই কৌশল ভবিষ্যতে আরও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। কারণ, আগামী দিনে তাদের আরও কঠিন কিছু বিল পাস করাতে হবে, যার মধ্যে রয়েছে বিশাল অঙ্কের কর কর্তন, ব্যাপকহারে অভিবাসন বিরোধী পদক্ষেপ এবং সরকারি বিভিন্ন খাতে ব্যয় সংকোচনের মতো বিষয়গুলো।
অন্যদিকে, যারা বিলের বিরোধিতা করেছেন, তাদের প্রতি ট্রাম্পের অবস্থান ছিল বেশ কঠোর। তিনি বিলের বিপক্ষে ভোট দেওয়া এক কংগ্রেস সদস্যকে আগামী নির্বাচনে হারানোর জন্য প্রচারণা চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
মোটকথা, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে যে, তিনি এখনও তার রাজনৈতিক প্রভাব ধরে রেখেছেন এবং দলের নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
তথ্য সূত্র: সিএনএন
মন্তব্য