
শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকলে কোনো নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বলেছেন, সে নির্বাচন তারা প্রতিহত করবেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পাগলা এলাকায় পুলিশের গুলিতে চোখের দৃষ্টি হারানো বিএনপি নেতা শহীদুল ইসলাম টিটুর বাড়িতে গিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
গত ২৯ জুলাই সিদ্ধিরগঞ্জে চিটাগাং রোড এলাকায় বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশের ছররা গুলিতে দৃষ্টি হারান ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল।
রিজভী বলেন, “আমরা সেই নির্বাচন প্রতিহত করতে চাই, যেখানে জনগণ অংশগ্রহণ করে না, ভোটাররা ভোট দিতে পারে না। শেখ হাসিনার একতরফা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না এবং তাকে করতে দেব না।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপির এই আন্দোলন প্রায় এক যুগের। ২০১১ সালে উচ্চ আদালত এই সরকার ব্যবস্থাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করলে নির্বাচিত সরকারের অধীনে ভোটের ব্যবস্থা ফেরে সংবিধানে।
এর প্রতিবাদে ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে আন্দোলন যায় বিএনপি। ভোট ঠেকাতে ব্যাপক সহিংসতার মধ্য দিয়ে হয় নির্বাচন। অবশ্য দেড়শরও বেশি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাস করেন সংসদ সদস্যরা।
২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয় আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেই। তবে এবার আবার পুরনো দাবিতে ফিরে গেছে দলটি।
রিজভী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী কদিন আগে বলেছেন তাকে নাকি সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনাকে তো সরাবে জনগণ। কাকে ক্ষমতায় রাখবে তা জনগণই বেছে নেবে। জনগণ চাচ্ছে যে আপনি (প্রধানমন্ত্রী) পদত্যাগ করুন। আর নির্বাচনকালীন একটি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকার দিন যাতে জনগণ সুষ্ঠুভাবে ভোটটা দিতে পারে।
“জনগণই তো দেশের মালিক। কাকে রাখবে আর কাকে সরাবে সেটা তো জনগণের অধিকার। এটাকেই তো গণতন্ত্র বলে।”
প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের অর্থ জানেন কি না, সে প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, “আপনি জানেন না। আপনি যেভাবে ক্ষমতায় থাকতে চান সেটার শিকার হচ্ছে শহীদুল ইসলাম টিটু। অর্থ্যাৎ দেশে বিরোধীদলের জন্য কথা বলার কোন জায়গা থাকবে না। সরকার একের পর এক অন্যায়, লুটপাট, টাকা পাচার করবে, এটার বিরুদ্ধে কথা বলার, মিছিল করার, স্লোগান দেওয়ার কোন লোক থাকবে না। আর যদি থাকে তাহলে তাদের পরিস্থিতি হবে শহীদুল ইসলাম টিটুর মতো।
“শেখ হাসিনার জোর করে ক্ষমতায় থাকার পরিণতি হচ্ছে টিটুর চোখের দৃষ্টি চলে যাওয়া।”
টিটুর দুর্ভোগ নিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, “চোখ নরম জায়গা। সেখানে গুলি লাগলে আর দৃষ্টি থাকে না। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) টিটুর চোখের আলো কেড়ে নিয়েছেন। আলো কেড়ে নিয়ে গোটা জাতিকে অন্ধকারের মধ্যে ফেলে দিয়েছেন। জনগণকে ত্যাজ্য করে নির্বিঘেœ ফ্যাসিস্ট ক্ষমতায় থাকবেন তা হতে পারে না। কোন ত্যাগ বৃথা যায় নাভ। এই ত্যাগের বিনিময়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হবে।
“আমরা আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যে আছি। আমাদের বিজয় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন থামবে না।”
বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটু, নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া, সহআন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, জেলা যুবদলের সদস্যসচিব মশিউর রহমান রনিও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন : ১২ টাকার ডিম ২০ টাকায় খাওয়ানোর হুঁশিয়ারি
সূত্র : এনএনবি
Time news FB Link