একান্ত মুহূর্তের ছবি হাতিয়ে ব্লাকমেইল, গ্রেপ্তার ৯

টেলিগ্রাম গ্রুপে নগ্ন ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় মডারেটরদের তা মুছে ফেলার অনুরোধ জানিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন কলেজপড়ুয়া এক তরুণী। মিনতি করে বলেন, দয়া করে আমার ভিডিওটি ডিলিট করে দেন। নইলে আমি কোথাও মুখ দেখাতেও পারবো না।

একই পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন রাজশাহীর এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে। ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় সামাজিক চাপের পাশাপাশি মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। নিজেকে গৃহবন্দী করে ঘুমের ওষুধ খাওয়া, নিজের হাত কাটা, চুল কাটার মত কাজ নিয়মিত করতে থাকেন তিনি। এক পর্যায়ে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন কয়েকবার। এমন আরও কয়েকজন ভিকটিম টেলিগ্রামকেন্দ্রীক গ্রুপ পমপমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তাদের ব্যক্তিগত ছবি বা ভিডিও ফাঁসের।

আরও পড়ুন : রাজবাড়ীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ২ জনের মৃত্যু

এই পমপম এবং তার মালিক মার্ক-সাকারবার্গের সন্ধান শুরু করেন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের টিম। অনুসন্ধান শুরু হয় একটি বিকাশ নাম্বারের সূত্র ধরে। ধীরে ধীরে তারা দেখতে পান এক অন্ধকার জগতের, যেখানে তরুনীদের ভিডিও ছড়িয়ে আছে। তবে সেসব ভিডিওর পুরোটা পেতে অর্থ ব্যয় করে সদস্য হতে হবে সিক্রেট পমপম প্রিমিয়াম গ্রুপের।

ক্রেতা সেজে দীর্ঘদিন যুক্ত থেকে পমপমের ৩টি প্রিমিয়াম ভর্সনের খোঁজ পায় চ্যানেল টোয়েন্টিফোর। এগুলোতে প্রায় সোয়া চার লাখ সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। এর সব গ্রুপে সদস্যদের জন্য প্রতিনিয়ত আপলোড করা হয় অরিজিনাল কন্টেন্ট বা ওসি। আমেরিকা, কানাডা, ইংল্যান্ড, পর্তুগালসহ নানা দেশের ক্রেতাই রয়েছে সেখানে।

আপলোডকৃত কন্টেন্ট কেউ মুছতে চাইলে দিতে হয় মোটা অংকের টাকা। তবে অর্থ দিতে ও ভিডিও কলে নগ্ন হতে রাজি না হলে ভিকটিমের ছবি আর পরিচয় প্রকাশ করে ভাইরাল করা হয়।

দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর ঢাকা, চট্রগ্রাম ও কক্সবাজারে অভিযান চালিয়ে চক্রটির মূলহোতা মার্ক সাকারবার্গ ওরফে আবু সায়েমসহ মোট ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডির সাইবার পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতদের ফোন ও ল্যাপটপ থেকে এখনো পর্যন্ত ২৮ হাজার আপত্তিকর ছবি আর ২০ হাজার ভিডিওচিত্র উদ্ধার করেছে সিআইডি।

সূত্র : চ্যানেল 24