সব
বাংলাদেশের প্রায় ৫ কোটি মানুষের বিভিন্ন থাইরয়েড সমস্যা রয়েছে বলে জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ক্লিনিক্যাল এন্ড্রোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ডায়াবেটোলজিস্ট অব বাংলাদেশ (এসিইডিবি)। তবে এসব রোগীর অর্ধেকের বেশি মানুষ জানে না যে তারা এ সমস্যা ভুগছেন। এছাড়া পুরুষদের তুলনায় নারীরা চার থেকে পাঁচগুন বেশি আক্রান্ত হন বলে জানিয়েছেন থাইরয়েড বিশেষজ্ঞরা।
গতকাল বুধবার রাজধানীর মোতালেব টাওয়ারে এসিইডিবির অফিসে বিশ্ব থাইরয়েড দিবস ২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. ফরিদ উদ্দিন। সঞ্চালনা করেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. এম এ হালিম খান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন ডা. এ কে এম আমিনূল ইসলাম। সার্বিক সহযোগিতা করে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রেনাটা লিঃ। অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বলেন, সুস্থ মা, সুস্থ সন্তান এবং সুস্থ জাতি গড়তে থাইরয়েড বিষয়ে গণসচেতনতা তৈরি করতে হবে। প্রতিনিয়তি থাইরয়েডে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে তবে সে অনুযায়ী চিকিৎসক বাড়ছে না। বাংলাদেশে সরকারি পুরনো ৮ টি মেডিকেল কলেজের এ চিকিৎসা দেওয়া হয়। নতুন করে আরও ৬টি মেডিকেল কলেজে এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ খোলার মাধ্যমে হরমোনজনিত রোগের চিকিৎসার জন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে সরকারি পর্যায়ে প্রায় ১০০ হরমোন বিশেষজ্ঞ কাজ করে যাচ্ছেন। আর বেসরকারি পর্যায়ে ২০০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কাজ করছেন।
আরও পড়ুন : কুষ্টিয়া সহ ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আভাস
তিনি বলেন, সুস্থ নবজাতকের জন্য সুস্থ মা একান্ত প্রয়োজন। মায়ের থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা থাকলে এর প্রভাব নবজাতকের উপর পড়ে। নবজাতকের থাইরয়েড হরমোনের অভাব শিশুর স্বাভাবিক শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধিতে ব্যাঘাত ঘটায়। যার ফলশ্রুতিতে শিশু প্রতিবন্ধিতে পরিনত হতে পারে। শিশুকে এ প্রতিবন্ধিতার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রতিটি নবজাতকের জন্মের সাথে সাথে থাইরয়েড হরমোন পরীক্ষা করা একান্ত জরুরি।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক আতিকুর রহমান বলেন, হরমোন নরমাল থেকেও থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে যেতে পারে। সাধারণত আয়োডিনের অভাবে গলাফুলা রোগ হয়ে থাকে, যাকে আমাদের সাধারণ ভাষায় ঘ্যাগ রোগ বলা হয়। বাংলাদেশে যদিও আয়োডিন যুক্ত লবন খাওয়া হচ্ছে, কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ডায়াবেটিস ও হরমোন বিভাগের উদ্যোগে পরিচালিত সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে। দেশের বেশিরভাগ স্কুলগামী শিশু এবং গর্ভবতী মায়েদের আয়োডিনের অভাব রয়ে গেছে। এ আয়োডিন শরীরে অতি প্রয়োজনীয় থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অধ্যাপক ডা. ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ বলেন, বন্ধাত্বের অন্যতম কারণ থাইরয়েড সমস্যা। তাই প্রেগ্ন্যাসির সমস্যার ক্ষেত্রে গাইনী বিশেষজ্ঞের পরামর্শের পাশাপাশি থাইরয়েডের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। অন্যথায় নবজাতকের মানসিক ও শারীরিক বৃদ্ধিতে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। শিশু হাবাগোবা হিসেবে বেড়ে উঠতে পারে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে গর্ভবতী অবস্থায় ও প্রসবের আগে থাইরয়েড পরীক্ষা জরুরি।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোঃ রুহুল আমিন বলেন, অধিকাংশ সময় এ রোগীর ভুল চিকিৎসার শিকার হয়। তবে এ রোগে মৃত্যু কম হওয়ার কারণে এবিষয় গুরুত্ব কম দেয় মানুষ।
সূত্র : বিডি প্রতিদিন
মন্তব্য