সব
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান।
চোর সন্দেহে মারধরের পর কুষ্টিয়া শহরে এক রিকশাচালকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে তার লাশ উদ্ধারের পর মামলা দায়ের, তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এই পর্যন্ত ঠিকঠাকই ছিল। তবে রহস্য তৈরি হয়েছে বুধবার রাতে ওই যুবকের নিখোঁজ থাকা ঘিরে।
নিহত সুরমান খান (৪৩) কুষ্টিয়া শহরের জিকে কলোনীর বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার সকালে প্রতিবেশি মোতালেবের বাড়ির টয়লেটে গলায় গামছা পেচানো অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনা গ্রেপ্তার হাকিমও তার পরিবার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের দিন হাকিমের বাড়ি থেকে ১০ লাখ নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি হয়। হাকিম সন্দেহ করেন থানা মোড়ে তার হালিমের দোকানের কর্মচারী আশরাফুল এই চুরি করতে পারেন। আশরাফুল নিহত সুরমানের ছোটভাই। এর জের ধরে গত মঙ্গলবার সকালে আশরাফুলকে ধরে ত্রিমোহনী এলাকার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে আটকে মারধর করেন হাকিমের লোকজন। এ ছাড়া কারিবুল নামে ওই এলাকার আরেক যুবককেও একই অভিযোগে সেখানে নিয়ে মারধর করা হয়। পরে আশরাফুল নির্যাতনের মুখে তার ভাই সুরমানের নাম বলেন। ওইদিন রাত ১টার দিকে সুরমানকে ধরে হাকিমের বাড়ি নেওয়া হয়। সেখানে তাকে কয়েকদফা মারধর করে বুধবার সন্ধ্যায় স্বজনদের কাছে দেওয়া হয় সুরমানকে। এরপর বুধরাতে রাতে কোথায় ছিলেন সুরমান? কে তার গলায় গামছা পেঁচালো এসব প্রশ্নে দাঁনা বাঁধছে রহস্য।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন জানান, এ ঘটনায় অভিযুক্ত নিহতের প্রতিবেশি হাকিম, তার স্ত্রী ও মেয়েকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেছেন।
নিহতের স্বজন ও একাধিক এলাকাবাসী জানান, বুধবার সন্ধ্যা তারা এলাকায় উন্মুক্তভাবে দেখেছেন তারা। এরপর রাতভর তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান। তিনি এলাকাবাসীকে ধৈর্য ধরার আহবান জানান।
এ সময় পুলিশ সুপার স্বজনদের বলেন, প্রকাশ্যে তাকে মারধর করা হলো কিন্তু আপনারা পুলিশকে জানাননি? এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তারা।
মামলার আসামি হাকিমের শ্যালক আজিমের স্ত্রী সাজেদা খাতুন বলেন, বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে পরিবারের কাছে দেওয়া হয় সুরমানকে। সেসময় তিনি সুস্থভাবে হেঁটেই বাড়িতে গেছেন। এমনকি বিকেলের দিকে শার্ট প্যান্ট পরে বাড়ি থেকে বের হতেও দেখেছে এলাকাবাসী। এরপর একটা রাতের মধ্যে কী হলো, সেটা আমাদের কাছেও রহস্য।
মন্তব্য